শনিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

।। কবিতা : অনুপম মুখোপাধ্যায় ।।





।। পিচ্ছিল যৌবনে দুঃখিত ঘাতক ।।

।। গাভীর মুখে চিবোনো ঘাস হস্তমৈথুনের মতো অবাক্‌ হয়ে গেছেএমনভাবে তাকালে যেন তোমার চোখ তোমার নিজেরই পছন্দের নয়। এ জীবন জলের দরে শুদ্ধএ জীবন মাছবাজারে শুয়ে থাকা বহুদূর বন্দরের ছায়া। বুক চিরলে সাদাকালো টিভির সরল প্যানেল দেখা যাবে। বোঝা যাবে মাটির মধ্যে ধাতু কেমন ঘুমায়আকরিক শব্দটার মধ্যে চিরকালীন মেছুনির বেগানা চুপড়ি খোলা আছেপ্রেমপ্রস্তাবের আছে নিজস্ব গ্রহউপগ্রহ পাখনা আর আঁশপৃথিবীতে অনেকরকম মাছঅনেক স্বাভাবিক স্বপ্ননকল স্বপ্ন দিয়ে মানুষকে মেরে ফেলার ছকভয় আর ডিপ্রেসন হাত মেলাচ্ছে। রাগ আর ডিপ্রেসন হাত মেলাচ্ছে। পুজোর শায়া ছোট বলে কেউ না কি গলায় শাড়ি দিয়েছিল বুড়ো নিমগাছের ডালে। অকারণ আত্মহত্যা বিশাল গাছটাকে আরো একা করে দ্যায়। আমিষের সাশ্রয়ে থাকবে কাঁটাপৃথিবীর সব স্মার্টফোন একসঙ্গে ঢাললে মাউন্ট এভারেস্টের চেয়ে ভয়াবহ লাগবে শান্তিকে পেছনে রেখে সূর্যের যন্ত্রপাতি সামনে যেতে চাইবেমন থেকে নাম না জানা পাতার মতো মরে যাবে তুমি। পাতা খসার আগেই পাতা কুড়ানোর জমি ঢালু হয়ে যায়। মাটি থেকে উঁচিয়ে থাকা ভাঙা গোলপোস্টের মতো ১ লিঙ্গ তোমাকে আরেকবার নিশ্চিহ্ন করবে। কুঠার নয়চাকু নয়। ১ ফোঁটা রক্ত নয়ভেবেছিলাম তোমার মৃত্যু কাল্পনিক হবে। তুমি আমার অস্থিরতায় মরবে। পবিত্র হ্রদের উপর ছটফটে রঙিন প্রোটিনবিজয় পতাকা। যোনির বদলে তুমি সংবিধান খুললে। পাখি পোড়াতে গিয়ে কেন দেবতা হয়ে ফিরব। পিচ্ছিল যৌবনে দুঃখিত ঘাতককে মানায়পুরোহিতের মুখোমুখি আরেক পুরোহিত এমন মৈথুন আমরা কেন করব আর।।


।। গালিব ও পোল্ট্রিযাপনের পালক।।

।। আজ সকালে সেই মোরগটার ডাক শুনলাম গালিব যেটার শুনতেনকাটার ঠিক আগে। আড়াই প্যাঁচ। কিছুটা ধুলো আর পালক ওড়ার পরে নিথর। ঈষৎ রক্তের ছিটে খোলা চোখ লুটিয়ে পড়া ঝুঁটিটার লাল রিক্ততা। ও কি জানল যে ওকে খাবে জীবনে সে ১ দিনও রোজা রাখেনি। ও কি জানে সিপাহী বিদ্রোহে যত রক্ত আছে ঘাস তত নেইআমি মোরগের মাংস ভালবাসিনরমাংস মনে হয় না আমার। ও যে ভোরের পাখি সেই ভোরে আজও আমার জন্ম হয়নি। বিদ্রোহীর মৃত্যু হলে ঝুলন্ত পা দেখে কুঁকড়ে যাই গলাকাটা কিশোরীর মতো। খুনি যদি সামনে দাঁড়ায় এমন মুখোশ আমি পরে নিতে চাই আমাকে যাতে সে আর চিনতে না পারেছুরি থেকে দূরে গিয়ে মোরগ হতে চাইচিরকাল মোরগরা নিজ নিজ ভোর খুঁজে একলা ডেকেছে। ওরা চেষ্টা করে রাত থেকে যত দূরে যাওয়া যায়সমবেত সঙ্গীতে আমিও আর আজকাল আস্থা রাখি না। ১-এর অধিক মুখে ১-ই গান পৃথিবীতে আজ অবধি গাওয়াই হয়নি। চেষ্টা করি চপার থেকে যতটা দূরে যাওয়া যায়। মাংস রাঁধার মরসুমে মানুষের প্রতি মানুষের দোষারোপের ধরণ বদলে যায়। গদ্য আর কবিতাকে মশলার বাণিজ্যে আমি আলাদা করে চিনতে পারিনিবেঁচে থাকা আর বেঁচে যাওয়ার মধ্যে পোল্ট্রিযাপনের পালক পড়ে আছে।।

৪টি মন্তব্য: