সম্পাদকীয়
।। প্রত্যেক প্রজন্মে ভাষার
বিশৃঙ্খলার মাত্রাটা বদলে যায়। এ কারণেই সিনিয়র খ্যাতিমান কবিদের কবিতা পড়াতে গিয়ে
তরুণ কবিরা প্রায়ই অম্লমধুর বিভিন্ন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন। নিজের অভিজ্ঞতা আর
অবস্থান থেকে এ নিয়ে কিছু বলছি। কমবয়সী উচ্চাকাঙ্ক্ষী কবিদের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত
সিনিয়র কবিরা দুটো পন্থা নেন। এক, তিনি সম্পূর্ণ উদাসীন থাকবেন, আপনার
অনেক চেষ্টাতেও তিনি একবার চোখ বুলিয়ে নিয়েই আপনার কবিতা আর পড়বেন না, পড়লেও একটা শব্দ উচ্চারণ করবেন না, অপেক্ষা করবেন
আপনার ফুরিয়ে যাওয়ার মুহূর্তের। দুই, তিনি আপনার কবিতা পড়বেন, প্রচুর মতামত দেবেন,
অঢেল প্রশংসা করবেন, দু-চারটে লাইন বা শব্দ
বদলাতে বলবেন, নিজেদের রাস্তায় এনে আপনার কবিতা ছাপবেন,
কবিতা উৎসবে ঢোকার ফাঁক করে দেবেন, এবং এই
ফাঁকে আপনার আত্মার একটা নিরপরাধ অংশে নিজেকে স্থায়ীভাবে বসিয়ে দেবেন, যখন আপনি নিজে কিছুটা উন্নতি করবেন এঁরাই তখন বিমুখ হয়ে আপনার সম্পর্কে
কটুক্তিও করবেন। আর
একদল আছেন, তাঁরা
সংখ্যায় অতি অল্প, তাঁরা বয়সের ধারণার উপরে, চিরতরুণ, কবিতার পিপাসার্ত পাঠক, কবিতা লেখার পাশাপাশি প্রচুর কবিতা পড়েন, কিন্তু
তাঁরা প্রতিষ্ঠিত নন, আপনাকে কিছু পাইয়ে দিতে পারবেন না,
কবিতা ছাড়া কিছু বোঝেননি বলে নিজেরাই প্রতিষ্ঠিত হতে পারেননি। তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারলে আপনার
কবিতার কল্যাণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু, আগে আপনাকে বুঝতে হবে, আত্মা-ছিনতাইকারী এবং তৃষ্ণার্ত মানুষের পার্থক্যটা। কোন প্রশংসা আপনার
প্রাপ্য, আর কোনটা আপনাকে কিনে নেওয়ার দাম, আগে বুঝতে হবে।।
অনুপম মুখোপাধ্যায়
পরিচালক, বাক্