একদিন হাসবো আমিও
একদিন
শিশুর হাড়ের তৈরি চিরুণী দেবো সাপের চুলে
পাখির
ত্বকের কাছে মাংসের আর্তনাদ ঠোঁটে মেখে
পশুরা
বেরিয়ে আসবে নিজ পালকের ভেতর থেকে
গাছের
শেকড়ে পড়ে থাকবে কোটর উন্মীলিত চোখ
একটা
ছোরা বসানো কলজে কাঁদবে তার বিজয়ী ছবির কাছে
অসংখ্য
গলাছিলা শকুন আকাশ থেকে নেমে এসে
নখে
মেখে নেবে রক্তপোস্টার।
সেদিন
ভালোবেসে আমিও সাহসী হবো
প্রতি
অঙ্গ থেকে ঘৃণাবিচ্যুত ক্লেদ ছুড়ে দেবো শ্রেণিবিভক্ত মানব সংসদে
হাসির
গমকে কাঁপবে তুমিও
দামি
গহনার উজ্জ্বল্য থেকে চুঁইয়ে পড়বে ক্ষুধার অলঙ্কার
একদিন
মানুষ আরেক মানুষকে দেখলে কাঁদতে চাইবে
কিন্তু
চোখের শুকনো নালা বেয়ে জলের পরিবর্তে
টপটপ
করে ঝরবে বিভক্ত স্মারক
ভালোবাসি
বললে অদৃশ্য হাত এসে মিথ্যাবাদী বলে
গলা
দেবে টিপে, সেদিন
অপরাধের মৈত্রী ছেড়ে
হাসির
কোরাসে আধভর্তি গ্লাসে বাজবে বেতাগী সমর্থন।
একদিন
হাসবো তুমুল
স্তনে
নূপুর বাজবে
শিশ্নে
আওয়াজ তুলবে গিটার
অলিগলি
পেরিয়ে শহরের চওড়া রাস্তায় চলবে অসংখ্য নৃত্য আর্ত শবযান
ছাই
থেকে উঠে দাঁড়াবে নীল আগুন
একদিন
হাসবো আমিও
শুধু
একবার অভিনন্দন জানাতে গায়ে গা ঠেলে
ভিড়ে
ঢুকে যাবো কীর্তিমানের টুকরো হাতে
সময়ের
প্রতিদ্বন্ধী চাকুর নিচে কর্তার অনুগত ভৃত্যের পোশাক ফেলে
পিতাকে
চোখ দেবো তবু কান্নার জল দেবো না
আকাঙ্খার
জিভে সংলাপ দেবো
বিপুল
আঙুল তুলে দেখাবো শক্তির দ্বীপ
নিরস্ত্র
দেহ হাতড়িয়ে আবিষ্কার করবো এক ফোঁটা সক্রিয় বারুদ
করতালি
করে ফিরিয়ে দেবো প্রতিটি অবহেলা।
হেসে
উঠবো, একদিন
সত্যি রপ্ত করে ফেলবো প্রত্ম অভিমুখী লুপ্ত সম্ভব
সীমাবদ্ধ
চাকরের ছোঁ রুখে দিয়ে সেদিন
সংক্ষেপে
নয় হা হা করে
উচ্চ
অনবদ্য মনে রাখার মতো
অনেকগুলো
হাসি আমিও দেবো।
ইশতেহার
চারদিকে
সুসংবাদ ছড়িয়ে দাও মুহূর্মুহু করতালিতে মূর্ছাহত আদম পাহাড়ের চূড়ায় এসেছে। আজ পৃথিবীর সব মানুষকে ডাকো, শত চেষ্টার পর আজই প্রথম বেদনাহত শিশিরে আগুন ধরেছে। রক্তবিন্দুকে এখোন ভোরের কুয়াশা মনে করে তৃষ্ণা মিটাতে
পারো। এই মৃত্তিকার ওপর একবারও বিচলিত না হয়ে কপোলের ভৎর্সনা
মুছে সসম্মানে দাঁড়াও। দেখো, নিষ্কৃতির শেষ আনন্দ আজ প্রার্থনা হয়ে ক্ষুধার তন্ত্রীতে
কবুল হয়েছে। হাসো, স্বপ্নের প্রতিষ্ঠা নিয়ে এই উৎসব উজ্জ্বল করো। বিশ্রাম ছেড়ে ঘরের কপাট খুলে দাঁড়াও। ভালোবাসার ঢলাঢলি ছেড়ে বীজ বপণ করতে মাঠে নেমে যাও। হে অধীর শ্রোতাবর্গ, রূপের সমর্থন আজ ফুলের গন্ধ নিয়ে জনের শরীরে ভাসছে, তাকে
চিহ্নিত করে এগোও।
ঘোড়ার
পিঠে চড়ে যারা এতোদিন পাতকুয়োর খোঁজ করেছিলে তারা দেখো হাতের তালুতে এক
ফোঁটা
প্রস্রবন নিয়ে এসেছি। পরিতৃপ্ত মহিষের নিদ্রা ঠেলে একে রোপন করো দৃষ্টিতে। মহোত্তম
সঙ্গীতের
মতো মিছিলে চিৎকার তুলো, তোমরা আসলে প্রত্যয়ী প্রেমিক সবুজ হৃৎপিণ্ড নিয়ে
ঘোরাফেরা
করছো। কিন্তু প্রজ্জ্বলনের অস্ত্র সোনালি ফসলের সপক্ষে চালাতে আজ
এই বদান্যতার
দুই
হাত তোমাদের খুব প্রয়োজন হয়ে গেছে। ধরো, সন্তানেরা উচ্ছ্বসিত হবে, রুষ্ট নারীরা ফিরবে
পুরনো
সঙ্গীতে, তুচ্ছ
প্রেমে তরুণেরা আর মাথাব্যথা করে ফেলবে না। আর কোন উপমার মৃত্য
হবে
না আলোর অভিবাদনে, উত্থান ব্যাহত হবে না দীর্ঘ হবে, উত্তাপ
শুষে নেবে উপেক্ষার সব রঙ। চারদিকে সুসংবাদ ছড়িয়ে দাও, পাথরে ধুলোর সাহস সঞ্চারিত হয়েছে। যারা ঘরহীন আছো তোমাদের উৎসব সফল হয়েছে শক্তির নির্মাণে।
এগিয়ে
এসো, সুন্দরতমো
ফুলটিকে পাহারা দাও। আজ এই স্বাক্ষর সৌভাগ্যের পাঠে আয়তন পেলো প্রশস্ত সাগরের। রক্তকণাকে এখন ভোরের সূর্য মনে করে তার নিচে এসে দাঁড়াতে
পারো। গায়ে চাদর টেনে ঘুমোতে যেতে পারো, বনভূমির
রহস্যে স্মরণ করতে পারো বিগত যাত্রার হাসি। আজ সব শঙ্কাকে হত্যা করে মাঠের কিনারায় মাটিচাপা দিয়ে
পুঁতে দিয়েছি একটি স্নিগ্ধ শেফালি। আজ সব প্রতিবেশীকে ডাকো, উপস্থিত মুসা লাঠির আঘাতে নির্গত করেছেন জীবনের বিরাট
উপকরণ। তরুণীর প্রত্যাখ্যাত বুকে লাল ডালিম ফেটে পড়বে, পুরুষেরা
ছোট্ট সবুজ ফলের মতো ঝুলে থাকবে জলগুল্মে, শাসনের শৃঙ্খল ক্ষয়ে স্নায়ুর কম্পনে আজ এনেছি দুর্লভ
অনুরাগ। ঘিরে দাঁড়াও সবটুকু আলোড়ন নিয়ে, বণ্টন
করো দেহকে প্রান্তর করে, কুড়িয়ে তুলো আঁখিপাতে প্রাণের এই ঘোষণা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন